আল্লাহর ভয় সম্পর্কে কথা বলার আগে আমাদেরকে জানতে হবে ‘ভয়’ জিনিষটা কি? এটা কখন কেন আসে। এটি পরিষ্কার না হলে মূল কথাটিও পরিষ্কার হবেনা।
“মূলত কোন মন্দ বিষয়ের আশঙ্কায় মানব সৃষ্ট দুর্ভাবনা ও দুশ্চিন্তাকেই ভয় বলে”
সেজন্য কাউকে ভয় পেতে হলে তার সর্ম্পকে সম্যক জ্ঞান থাকাটা অপরিহার্য। অথবা কাউকে ভয় পেতে হলে তার সামনে উপস্থিতি জরুরী। উদাহরণ হিসেবে বিষয়টি দেখি।
বাঘ, ভাল্লুক কিংবা বিষাক্ত সাপের মুখোমুখি হলে এবং নিজে কোন প্রকার দোষ-অপরাধ না করা সত্ত্বেও অন্তরে প্রচন্ড ভয়ের সৃষ্টি হয়। কারণ কি? তা হল প্রতিপক্ষের স্বভাব, ক্ষমতা সর্ম্পকে ধারণা থাকার কারণেই এমন হয়। এমন প্রাণীদের সামনে কাউকে দোষ করতে হয়না, সে নিজেই গায়ে পড়ে আক্রমণ করবে। এটাই মূলত ভয়।
বিড়াল-কুকুর আদরনীয় প্রাণী। সবাই তাদের খাসিয়ত সর্ম্পকে বুঝে। কিন্তু কখনও পাগল হয়ে উঠলে তার মালীকও তার থেকে দূরে পালাতে থাকে। কখনও তাকে নির্মমভাবে মেরে ফেলতেও হয়। কেন হয় এমনটি? কারন মানুষ জানে বিড়াল-কুকুর পাগল হলে তখন আর মালীক মানবে না। উপরোন্তু তার আক্রমণে মানুষকেও পাগল হয়ে যেতে পারে। মানুষের এই জানা কারণটিই আরেক প্রকার ভয়।
তাহলে মানুষ আল্লাহকে ভয় পায় না কেন? উত্তর একটাই। কোটি কোটি মুসলমান দুনিয়াতে বসবাস করলেও সবার কাছে আল্লাহর ক্ষমতা এবং পরকালীন শাস্তি সম্পর্কে ধারণা না থাকা।
অনেক দ্বীনদার জ্ঞানী ব্যক্তি ওয়াজ নসিহত করে। সুযোগ পেলে অন্যায় কাজ করে, সুদ-ঘুষ হারাম খায়, মানুষকে উৎপীড়ন করে। আবার মসজিদে জামাতে নামাজ পড়ে। হজ্ব করে ফেসবুকে পোষ্ট দেয়।
এরা মুসলমান হলেও এদের কাছেই মূলত আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্ম্পকে পরিপূর্ন ধারণার অভাব রয়েছে। সে কারণেই তারা আল্লাহ ভয় করে না, কোরআনের হুশিয়ারী বাণীকে সহজে উপেক্ষা করে।
মানুষ যতই জ্ঞানী ও আমলদার ব্যক্তি হউক না কেন। যার কাছে আল্লাহর পরিচয় পরিষ্কার নয়। তার হৃদয়ে কোনদিন আল্লাহর ভয় জাগ্রহ হবেনা।
যিনি আল্লাহর ক্ষমতা সর্ম্পকে ভাসা ভাসা ধারণা রাখে, যার কাছে মহাবিশ্বের ভয়ঙ্কর অস্তিস্থ নিয়ে বুঝজ্ঞান নেই। এগুলো কিভাবে ঘুরে, কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়, কত ধরনের জটিল ম্যাকানিজম এর পিছনে কার্যকরী আছে, এসব না জানলে তিনি আল্লাহর সক্ষমতা সর্ম্পকে বিশ্লেষণ করতে পারবে না।
তেমন ব্যক্তির অন্তর যদি কোরআন-হাদিস দ্বারা ভরপুর হয়ে যায়। আমল করতে করতে পরিপূর্ণ আবেদ হয়ে উঠে। তারপরও তার হৃদয়ে যথাযত আল্লাহর ভয় জাগ্রত হবে না এবং তিনি নিজের জ্ঞাতে কিংবা অগোচরে ভুল করতে থাকবে আল্লাহকে সাক্ষি রেখেই।
Discussion about this post