গত ১০ই জুন বৃহস্পতিবার একজনের সাথে অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলাম। তার আগের দিন তিনি PCR টেস্টের জন্য স্যাম্পল দিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় তার রিপোর্ট আসে যে, তিনি Covid Positive. আমিও দুবার টেস্ট করালাম, পরিবারকে করালাম, বরাবরই Nagetive. ডিজিটাল কেরামান কাতেবীনের খপ্পড়ে
আরো পড়তে পারেন…
- শৃগালের সাথে মানুষের মিল যেখানে
- গাছ : সদাস্থায়ী কল্যাণের বাহন
- করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী
- কোয়ারেণ্টাইনের শেষ দিনলিপি
গভীর রাত্রে ফোনে একটি ম্যাসাজ আসে। তাতে উল্লেখ থাকে যে, করোনা পজিটিভ কোন একজনের সাথে আমি কিছুক্ষণের সান্নিধ্যে ছিলাম। তাই এখুনি আমাকে অন্যজন থেকে আলাদা হয়ে যেতে হবে এবং সকাল হওয়া অবধি নিকটস্থ করোনা হাসপাতালে সশরীরে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি জানাতে হবে। নির্দেশনা পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও যদি কোন কিছুর ব্যত্যয় হয়, তাহলে চড়া মাশুলে জরিমানা গুনতে হবে!
অগত্যা করোনা সেন্টারে উপস্থিত হলে, হাতে বন্দিত্বের ঘড়ি পড়ানো হয়। দশ দিন নিজ ঘরে বন্ধী থাকতে হবে। এটি দেখতে ঘড়ির মত লাগলেও, মূলত এটা জেলের এক প্রকার ডান্ডা বেরির মত! আর কাজের ধরণ কিছুটা দুই কাধে বসে থাকা কেরামান কাতেবিন ফেরেশতার ন্যায়! এই ঘড়ি খোলা-বাঁধার জন্য সরকার নিমিত্ত স্পেশাল টেকনিশিয়ান আছে, তার কাছে আছে বিশেষায়িত স্ক্রু-ড্রাইভার। তাই এই ঘড়িকে একটি সাক্ষাত ডিজিটাল “কেরামান কাতেবিন” বলা যায়, যেন দুষমনের সাথে বসবাস! ঘরের চৌহদ্দির বাইরে গেলেই, সে তথ্য পুলিশের কাছে পাচার করে দেয়! আরো কত কি? ডিজিটাল কাহাকে বলে ও তার প্রয়োগ কেমন, এদেশে পা না রাখলে বুঝা দায়।
মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে মানুষের যত আবিষ্কার, তেমনটি অন্যদের ক্ষেত্রে হয়নি। কল্পনায় ছবি আঁকছি, “সামনে এমন একটি দুনিয়া আসবে; যখন ভূমিষ্ঠ শিশুর অঙ্গে কায়দা করে একটি ছোট্ট সুঁই ঢুকিয়ে রাখা হবে! পরবর্তীতে সেই সুঁই ID Card, Tracker, GPS, Passport সহ নানা উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হবে এবং হওয়াটা খুবই সম্ভব। কোন জেলখানার দরকার হবেনা। কোন জেল রক্ষীর প্রয়োজন হবেনা। শুধু বলা হবে, ঐ জায়গার মধ্যেই ঘুরে বেড়াও এবং ভুলেও বের হবে না। মনুষ্য পাহারা বিহীন দুনিয়ায়, খোলা আকাশের নিচেই বন্দিত্ব বরণ করতে হবে। মিছিল মিটিং করার সুযোগ চলে যাবে। তাই চলুন বর্তমানকে উপভোগ করি এবং এটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকি। আলহামদুলিল্লাহ!
Discussion about this post