আমাদের দেশে যে কয়েকটি গুল্ম সহসা মানুষের নজর কাড়ে সেসব গাছের মধ্যে দার্দমর্দন অন্যতম। এর ফুল, পাতা, কাণ্ড, বীজ থলে সবই আকর্ষণীয়। এটি একটি ঔষধি গাছ হলেও, বহু সৌখিন মানুষ সখ করে নিজেদের বাগানে রোপণ করে। ময়লার ভাগার কিংবা কবরস্থানে এটি নিজে লড়াই করেই বেড়ে উঠে। দার্দমর্দন Candle Bush
এই গাছটিকে বাংলাদেশে দাদমর্দন হিসেবেই চিনে। এর ইংরেজি নাম: Candle Bush এবং বৈজ্ঞানিক নাম: Senna Alata. দার্দ ও চর্মরোগের জন্য অব্যর্থ মহৌষধ বলেই এই সুন্দর গাছটির নাম দাউদ-একজিমার মত পচা রোগের সাথে সম্পর্কিত হয়ে যায়।
এর পাতার বড়ি জোলাপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়! জোলাপ শব্দটি গোলাপ এর আত্মীয়ের মত লাগলেও বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জোলাপ কি খাওয়ার জিনিষ না ব্যবহারের জিনিষ; এই বিষয়টি পরিষ্কার নয়। কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করতে এই গাছের বড়ির জুড়ি নেই। এটা খাওয়ার পড়ে পেটের নাড়ি ভুঁড়ির সমূদয় রাস্তা এমন ভাবে তরল ও পিচ্ছিল করে দেয়। ফলে সেখানে শক্ত পায়খানা আটকে থাকবে তো দূরের কথা; চির-কৃমির বংশধর পর্যন্ত আছাড় খেয়ে বেরিয়ে আসে। ইউনানি-আয়ুর্বেদের এই পদ্ধতির নাম জোলাপ।
দার্দমর্দন গাছের পাতা খুবই সতেজ ও সবুজ। গুচ্ছাকারের হলুদ ফুল খুবই দৃষ্টিনন্দন ও মায়াবী। বাসী ফুল থেকে বরশী আকৃতির সিম বের হয়। এর ফুলে কোন মধু হয়না, তাই মৌমাছির আনাগোনা দেখা যায় না। তবে ফুলে অনেক পরাগ সৃষ্টি হয়। আর ভ্রমর তার বাচ্চাকে পরাগ খাইয়ে বড় করে। ফলে সিম, বরবটির মত এই ফুলেও ভ্রমরের আনাগোনা দেখা যায়।
দার্দমর্দন গাছের একটি কৌতূহলী চরিত্র আছে। ফুলের পাপড়ি কিংবা নরম কাণ্ড থেকে আঠালো রস বের হয়। সেগুলো স্বাদে মিষ্টি, এসব খেতে পিপড়ার সাড়ি দেখা যায় এই গাছে। এভাবে পিপড়াদের আকৃষ্ট করতে, দার্দমর্দন গাছের একটি অন্যতম কৌশল। ফলে মানুষ এই গাছের ফুল ছিঁড়ে না কিংবা উপদ্রব সৃষ্টিকারী কোন কিট পতঙ্গ এই উদ্ভিদের পাতা চিবাতে যায় না।
Discussion about this post