ব্যক্তিত্বকে ইংরেজিতে Personality বলা হয়। ব্যক্তিত্ব এমন এক বিশেষ গুণাবলী যা অনেকের কাছে থাকেনা। যার কাছে ব্যক্তিত্ব থাকে, সে কোন না কোন ভাবে সমাজ ও পরিবেশে পরিচিত হয়ে উঠে। মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে। প্রতিষ্ঠিত হতে ব্যক্তিত্বের ভূমিকা
আরো পড়তে পারেন…
- মানুষ কেন গালি দেয়
- Aristocracy আভিজাত্য কি
- হীনমন্যতা আভিজাত্যকে পদদলিত করে
- শরাব মানুষের ব্যক্তিত্ব ও আভিজাত্য নষ্ট করে
মনোবিজ্ঞানের ভাষায় ব্যক্তিত্ব হচ্ছে,
“কোন ব্যক্তির মানসিক প্রক্রিয়া ও আচরণের এক স্বতন্ত্র ধরন। যা কেবল তার মধ্যেই বিদ্যমান থাকবে। যদ্বারা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করা যায়”
সুতরাং ব্যক্তিত্বের সাথে ধন-সম্পদ, ক্ষমতার কোন সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক হল অধ্যবসায় ও যোগ্যতার। যার কাছে ব্যক্তিত্ব আছে সেই গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে। আগ্রহী প্রত্যেক ব্যক্তিই ব্যক্তিত্ব অর্জন করতে পারে যদি, নিজের ব্যক্তিগত কিছু বিষয়ের প্রতি তিনি সতর্ক নজর দেন। যেমন
বিনয়ী শ্রোতা:
ব্যক্তিত্ব-বান ব্যক্তিকে বিনয়ী শ্রোতা হবার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। শিশু থেকে বুড়ো সবার কথা যে বিনয়াবনত-চিত্তে শুনে, সে সবার ভালবাসা পায়। এমন ব্যক্তি বৃদ্ধ হলেও তরুণদের কাছে গ্রহণীয় থাকেন।
চলমান জ্ঞান:
ব্যক্তিত্ব-বানকে জ্ঞানী হতেই হয় কিন্তু চলমান জ্ঞান সম্পর্কে বে-খবর হলে চলে না। পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকলেও অন্তত ধর্ম, রাষ্ট্র, সমাজ, বিজ্ঞান অর্থনীতি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান তার কাছে থাকা বাঞ্ছনীয়। এমন মানুষের সাথে সাধারণ মানুষ মিলে চলতে চায়, পরামর্শের জন্য আসে এবং অন্যদের কাছে পরিচিত পায়। প্রতিষ্ঠিত হতে ব্যক্তিত্বের ভূমিকা
সদালাপী:
সদালাপী গুণ না থাকলে কেউ ব্যক্তিত্ব অর্জন করতে পারে না। এই গুনের কারণে একজন সাধারণ প্রকৃতির মানুষও অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে। বিপরীতে অভিজাত ও ধনিক শ্রেণীর মানুষের কাছে গর্ব-অহংকার বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং দিনে দিনে এই গুন কমতে থাকে। তাদের বন্ধুর পরিধি ছোট হতে থাকে। এর ফলে প্রয়োজনে তারা সাধারণ মানুষের কাছাকাছি হতে পারে না। টাকার ছড়াছড়ি না করা পর্যন্ত ভোটে তারা সাধারণ জনগণের ভোট পায়না।
মিশুক হওয়া:
মিশুক হওয়া উত্তম গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত। যে সবার সাথে কথা বলে তাকে মিশুক বলে না। মিশতে হলে রুচি, অভ্যাস ও সামাজিকতার মিল থাকতে হয়। একটু হেরফের হলেই, মানুষ একাকী বসে থাকে তবুও অন্যের সাথে মিশে না। মূলত মিশুক হল সেই ব্যক্তি, যে উপযাচক হয়ে প্রথমে অন্যকে নিজের পরিচয় দেয় এবং বিনয়ের সাথে সঙ্গ পাওয়া কিংবা কথাবলার অনুমতি প্রার্থনা করে। অন্যকথায় যে সর্বত্র সর্বাগ্রে সালাম প্রদান করে, সেও একজন মিশুক মানুষ।
উপস্থাপনার শক্তি:
উপস্থাপনার মাধ্যমেই মানুষের ব্যক্তিত্ব কেমন তা সামনে এসে যায়। শুধু মিডিয়া কিংবা স্টেজে উপস্থাপনার কথা বলা হচ্ছে বিষয়টি এমন নয়। উপস্থাপনার ধরণকে মানুষ গোপনে অনুসরণ করে। তাই ব্যক্তিত্ব-বান ব্যক্তিকে হুলুস্থুল না করে, উপহাস পরিহার করে, তার কথাকে সুন্দরভাবে বুঝাতে পারার অভ্যাস রপ্ত করতে হয়।
মূল্যায়ন:
মূল্যায়ন একটি বড় রকমের মৌলিক গুন। যে যার মূল্য দেয়, মনের কথা বলার জন্য তাকেই বাছাই করে। তিনি নিরাপদ মানুষ হিসেবে পরিগণিত হয়ে উঠেন। সবার সম্মান ও গ্রহণযোগ্যতা পায়। এটি এমন গুণ, একটি শিশুকেও যদি মূল্য দেওয়া হয়, সে শিশুটিও এটি আজীবন মনে রাখে। ব্যক্তিত্ব-বান ব্যক্তির কর্মকাণ্ড তার স্মৃতিপটে এঁটে যায়।
Discussion about this post