Tipu vai
  • মুলপাতা
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • কোরআন
    • হাদিস
    • ডায়েরি
    • জীবনী
  • সাহিত্য
    • গল্প
    • রচনা
    • প্রবন্ধ
    • রম্য রচনা
    • সামাজিক
  • পরিবেশ
    • উদ্ভিদ জগত
    • প্রাণী জগত
    • ভেষজ হার্বাল
    • জলবায়ু
  • শিক্ষা
    • প্রাতিষ্ঠানিক
    • মৌলিক
    • ইতিহাস
    • বিজ্ঞান
    • ভ্রমণ
    • শিশু-কিশোর
  • বিবিধ
    • ঘরে-বাইরে
    • জীবন বৈচিত্র্য
    • প্রতিবেদন
    • রাজনীতি
    • তথ্যকণিকা
  • লেখক পরিচিতি
No Result
View All Result
নজরুল ইসলাম টিপু
  • মুলপাতা
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • কোরআন
    • হাদিস
    • ডায়েরি
    • জীবনী
  • সাহিত্য
    • গল্প
    • রচনা
    • প্রবন্ধ
    • রম্য রচনা
    • সামাজিক
  • পরিবেশ
    • উদ্ভিদ জগত
    • প্রাণী জগত
    • ভেষজ হার্বাল
    • জলবায়ু
  • শিক্ষা
    • প্রাতিষ্ঠানিক
    • মৌলিক
    • ইতিহাস
    • বিজ্ঞান
    • ভ্রমণ
    • শিশু-কিশোর
  • বিবিধ
    • ঘরে-বাইরে
    • জীবন বৈচিত্র্য
    • প্রতিবেদন
    • রাজনীতি
    • তথ্যকণিকা
  • লেখক পরিচিতি
No Result
View All Result
নজরুল ইসলাম টিপু
No Result
View All Result

ভ্যান গাড়ীর চালক

কি নাম আপনার? খলিলুর রহমান। তুমি কি আমার ক্লাস মেট খলিল? হাই স্কুলে সাথে পড়তাম? আপনি যে খলিলকে চিনেন, সে মরে গেছে! আমি ভ্যান গাড়ী ওয়ালা খলিল!

ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫
in জীবন বৈচিত্র্য
3 min read
0
শেয়ার করুন
        
কোয়েলের মত চোখ, কানের উপরে কাটা দাগ এসব মুছে ফেলার ডাক্তারি বিদ্যা এখনও বের হয় নাই। তাই বুঝতে পারলাম কোন কারণে সে তার পরিচয় দিতে চাচ্ছেনা, তাই অসত্য কথার আশ্রয় নিচ্ছে ভ্যান চালক খলিল।
ভ্যান গাড়ী ওয়ালা, স্টিলের আলমারিটা ঘরে ঢুকিয়েই উঠানের শেষ মাথায় আম গাছের নীচে দাঁড়িয়ে রইল। চিল্লীয়ে তাগাদা দিচ্ছিল তার ভাড়ার টাকাটা যাতে তাড়াতাড়ি দিয়ে দেই। খোলা জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালাম। ভ্যান ওয়ালা এক প্রকার কৌতূহল ও হতাশ ভঙ্গিতে গৃহস্থের বাড়ীর দিকে তাকাচ্ছিল আর চোখের ভ্রু-যুগল ডলে অনবরত ঘামের পানি মাটিতে ফেলছিল। 
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরমে চারিদিক চৌচির। ভ্যান গাড়ী চালকের কোমরের গামছা অনেক আগেই ঘামের পানিতে ভিজে এতটাই পানি ভরেছে যে, সেটাতে আর নূতন করে পানি ধারণের ক্ষমতা নাই। সে ওখানে দাড়িয়েই এক গ্লাস পানির জন্য অনুরোধ করছিল। আমার প্রবাসী ছেলেটাকে পাঠিয়ে তাকে ঘরে এসে পানি পান করার জন্য বলতে গেলে, ভ্যান গাড়ী ওয়ালা বিনয়ের সাথে প্রত্যাখ্যান করল।
এবার আমিই দরজায় দাঁড়িয়ে, ঘরে এসে শরবত পান করে যাবার জন্য জন্য আহবান করলাম! যথারীতি বুকে হাত দিয়ে বিনয়ের সাথে প্রত্যাখ্যান করল। আমি যে তাকে ঘরে এসে শরবত পান করতে আহবান করেছি, বুকে হাত দিয়ে বুঝাতে চাইল এতটুকু বদান্যতাতেই সে যথেষ্ট সম্মান বোধ করেছে।
– জোড় খাটালাম। ঘরে চল বলেই টানতে রইলাম।
– সে ছাগলের মত খোট মেরে মাটিতে দাঁড়িয়ে রইল। অনুরোধ করতে রইল, বড় লোকের ঘরে ঢুকে অপমানিত হতে চাইনা। আমরা গরীব মানুষ, রাস্তার মানুষ, রাস্তাতেই নিজেই ঠিকানা খোঁজে বেঁচে থাকে চাই!
– এসব কথা কেন? আর আমি তোমাকে কেনই বা অপমান করতে যাব? তুমি আমার ক্লাস মেট, ভাগ্যের ফেরে তুমি হয়ত ভ্যান গাড়ির চালক, আর আমি জাপানী গাড়ী চালাই। আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জানাই কেননা আমি তোমার চেয়ে ভাল। হতে পারে, কোনদিন দুর্ভাগ্যের চক্র পড়ে আমাকেও তোমার মত ভ্যান চালাতে হতে পারে। এটাই দুনিয়ার নিয়ম, অপ্রিয় সত্য ও তিক্ত বাস্তবতা। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থানে সন্তুষ্ট থাকার মাঝেই মানব জীবনের সার্থকতা। এ ছাড়া তোমার আর আমার মাঝে কোন ব্যবধান নাই। তোমাকে আমি কোনদিন ভুলিলি, আমার সকল সহপাঠীকেই মনে রেখেছি।
– গল গল করে চোখের পানি বেয়ে পড়ল, শিশুর মত কান্না করে একটি ঘটনার কথা বলল, সেটি শুনে নিজেকে সংবরণ করতে পারলাম না। তার মুখেই শুনুন:
স্কুল জীবনের কঠিন পাঠ, মাঝ পথে ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। এক পর্যায়ে জীবন বাঁচানোর তাগিদে আগে ঠেলা গাড়ী ঠেলতাম, তারপর রিক্সা চালাতাম অতঃপর ভ্যান চালানো শুরু করলাম। ফখরুল তো আমাদেরই ক্লাস মেট ছিল, বিদেশে গিয়ে ব্যবসা করে প্রচুর টাকা কড়ি কামিয়েছে। মাটির ঘর দালানে পরিবর্তন হয়েছে। বাজারে দোকান দিয়েছে, ধনী লোকের মেয়ে বিয়ে করেছে, শহরে জায়গা জমি সবই করেছে। বিয়ে করার জন্য বাড়ী এসেছে, তার বিয়ে উপলক্ষে বাড়ীতে যত মাল-সামান আনা নেওয়া দরকার, তা সবই আমি টেনেছি। ইচ্ছা করেই তাদের বাড়ীতে একটু বেশী করে অপেক্ষা করতাম এই প্রত্যাশায় যে, আমাকে একাকী দেখলে হয়ত ফখরুল তার গরীব ক্লাস মেট খলিল কে চিনবে। না! সে আমাকে চিনে নাই, তাই বিয়ের দাওয়াত পাইনি। বিয়ে পরবর্তী সমুদয় মাল-পত্রও আমি টেনেছি। নিজে নিজে ভাবতাম, ক্লাস এইট পর্যন্তই তো একসাথে পড়লাম, না চিনার কারণ তো থাকতে পারেনা। 
বিয়ের পরে একদা সে তার নব বধূকে নিয়ে বাজারে গাড়ি থেকে বাজারে নামল। আমি বহুদিন ধরে এই ধরনের একটি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। উপস্থিত আমার বড় ভাইয়ের নতুন রিক্সাটি হাওলাত নিয়ে, নব দম্পতির দিকে এগিয়ে গেলাম। তারাও আমার নতুন রিক্সা দেখে কোন কথা না বলেই উঠে পড়ল। দক্ষিণা হাওয়া গায়ে লাগিয়ে আমার রিক্সা দ্রুত চলছে। নব দম্পতির কথার দিকে মন দিলাম। বুঝতে পারলাম তারা অনেক উৎফুল্ল, এই মুহূর্তে সুন্দর মনের মাঝে আছে।
আমি ভাবতে রইলাম, কিভাবে আমি আমার মনের কথাটি ফখরুলকে বলি। চিন্তা করলাম, দম্পতি যুগলের কথার ফাঁকেই বলে আমি আমার কথাটি তুলি। ‘ফখরুল আমার ছেলেটাকে যদি একটা ভিসা দাও, তাহলে আমার বড় উপকার হবে। তোমাকে টাকাটা আমি একত্রে দিতে পারব না, তবে নির্ঘাত এক বছরের মধ্যে দিয়ে দিতে পারব। তুমি আনন্দ করার জন্য পুকুর পাড়ে অতিরিক্ত আরেকটি আলীশান ঘাট বেঁধেছ, সে ধরনের একটি ঘাটের টাকা দিয়ে আমার ছেলের মত ছয় জনকে বিদেশে নিয়ে যেতে পারবে। তোমার তো অনেক টাকা, প্রচুর টাকা’। 
না, সে কথা আর বলা হয়নি, ততক্ষণে রিক্সা তাদের বাড়ীর আঙ্গিনায় ঢুকে পড়েছে! ভাবলাম রাস্তাটি যদি আরেকটু লম্বা হত, তাহলে আমার জন্য কতই না উত্তম হত।
পাঁচ টাকা বখশিশ যোগে ভাড়াটা দিয়ে দিল! তার মুখের দিকে ঠাঁই তাকিয়ে রইলাম, যদি একবার চোখাচোখি হলে কথাটা বলার সুযোগ ঘটবে। নাহ্! আমার ধারনা মত হল না, বাড়ির দিকে দম্পতি যুগল পা বাড়াল। ঠিক সেই মুহূর্তে ডাক দিলাম। 
– ফখরুল!
– দম্পতি যুগল ঘুরে দাঁড়াল
ফখরুল, আমি খলিলুর রহমান। তোমারই বন্ধু ও ক্লাস মেট। তুমি কি আমাকে মনে করতে পেরেছ? 
আমার এই সম্বোধন ফখরুলের মাথায় যেন আসমান ভেঙ্গে পড়ল, সে নিজেকে অপমানিত বোধ করল এবং প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে বলে বসল, ‘ফকিন্নির পুত! চাঁদে হাত বাড়াও। অতিরিক্ত বখশিশ পেয়ে এখন বন্ধুত্বের লোভ বেড়েছে! আর কোনদিন আমাদের মালামাল টানবি না। ছোট লোক কোথাকার’!
খলিল হাউ মাউ করে কেঁদে বলল, সেই থেকে আমি অবধি আমি সম বয়স্ক কাউকে ভয়ে ভাই বলে ডাকি না। তুমিও যদি আমাকে তোমার স্ত্রী-পুত্রের কাছে ফখরুলের মত অপদস্থ কর, সেই ভয়ে তোমাকে পরিচয় দিতে চাই নাই। তোমাকে আমি চিনি, কাছে ভিড়তে সাহস পাইনা কেননা ছোট লোকদের সর্বদা ছোট পরিসরে থাকাই উত্তম।
কি বলে যে, খলিলকে সান্ত্বনা দিবে কুলিয়ে উঠতে পারলাম না। নিজের অজান্তেই কিছুক্ষণের জন্য নিকট অতীতে ফিরে গেলাম।
প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার খলিল পড়া পাড়ত না। বদমেজাজি ইংরেজি স্যার এই কারণে তাকে বেদম মার দিত। খলিল মার সহ্য করতে না পেরে সে স্যারের পা জড়িত ধরত। তার কান্না দেখে অন্যান্য ছাত্ররাও কান্না জুড়ে দিত। তার মেধা ও স্মরণ শক্তি প্রখর ছিল। অষ্টম শ্রেণীতে ৮০ জনের মাঝে আমরা মুসলিম ছাত্র মাত্র ৭ জন, বাকিরা হিন্দু! কেন জানি, হিন্দু ছাত্ররা নিজেদের আলাদা রাখত এবং মুসলিম ছাত্রদের সহযোগিতা করত না। ফলে সকল ক্লাসে দুটো মেরু হয়ে থাকত। খলিলকে তারা কেউ সহযোগিতা করত। ফলে খলিল স্কুলে এসেই আমার নিকট থেকে পড়া দেখে নিত এবং যথাসম্ভব শিখতে থাকত!
– একদিন তাকে প্রশ্ন করলাম, তুমি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দুটি দিন পড়া পার না কেন?
– সে বলল, আলোর অভাবে অভাবে পড়তে পারেনা। রোববার এবং বুধবারে তাকে তার বাবার সাথে বাজারে যেতে হয়। বাজার থেকে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। তাই সোমবার এবং বৃহস্পতিবারের পড়াটা তৈরি করতে পারেনা।
– বললাম, সে কি কথা! আমরা তো পড়ার টেবিলে সন্ধ্যার পরই বসি। তোমার পিতা তো সন্ধ্যার একটু পরেই বাড়ীতে চলে আসে। তাহলে সন্ধ্যার পরে বসে পড়াটা তৈয়ার করতে তোমার সমস্যা কোথায়?
– উত্তরে জানাল, তাদের ঘরে যে চেরাগ নাই! 
– নাই কেন?
– বলল, তার মা-বাবা বলেছে, চেরাগ কিনলে প্রতিদিন কেরোসিনও কিনতে হবে! যেহেতু প্রতিদিন কেরোসিন জ্বালাতে পারবে না তাই চেরাগও কেনা হয়নি!
– তাহলে অন্যান্য দিনে কিভাবে পড়া তৈরি কর? 
– অন্যান্য দিন সন্ধ্যার আগেই সূর্যের আলোতে লেখা শেষ করে ফেলি এবং মায়ের পাশে বসে চুলার হালকা আলোতে পড়ার কাজটা সেরে নেই। যেদিন তার বাবার সাথে বাজারে যেতে হয়, সেদিন বাড়ীতে ফিরার অনেক আগেই চুলার আগুন নিভে যায়। যার কারণে আর পড়া তৈরি করতে পারে না।
-তাকে বললাম, আসলে তোমার বাবা-মা কিপটে, কৃপণ প্রকৃতির মানুষ।
– খলিল উদাস ভঙ্গিতে আকাশের পানে তাকিয়ে থাকে, কোন উত্তর দেয় না! শুধু এতটুকুই বলত, এক জনের হৃদয়ের অনুভূতি অন্যজন কখনও বুঝেনা। তাই দুনিয়াতে কেউ কাউকে মূল্যায়নও করতে পারে না। শিক্ষকের বেতের মারের ভয়ে, খলিল একদা স্কুল ছেড়ে চলে যায়।
– সে বছর রোজার সময় ঈদের বাজারে, এলাকার জন্মান্ধ ভিক্ষুক ‘অন্ধ হাশমত আলীকে’ ফিৎরা-জাকাতের জন্য মানুষের দোকানে, রাস্তায় আহবান করতে দেখলাম। আগেই থেকেই এই ব্যক্তিকে একটি প্রধান সড়কের মোহনার বাঁকে বা টেকে বসে দীর্ঘ বছর ভিক্ষা করতে দেখেছি। ফলে সড়কের সেই টেকের চিরস্থায়ী নাম হয় যায় ‘আন্ধাইয়ার টেক’, আজ পর্যন্ত সেই টেক এই নামে আছে! অন্ধ হাশমত বাজরে একটি লাটির এক মাথা ধরে হাঁটছেন, লাটির অন্য মাথা আরেক জনের হাতে। সামনের জন যেদিকে হেঁটে চলছেন, অন্ধ হাসমতও অন্ধের মত তাকে অনুসরণ করছেন। সেই ব্যক্তিকে পিছন থেকে চিনা যাচ্ছিল না, কৌতূহলে কাছে গিয়ে দেখলাম, তাকে দেখে এমন ভাবে তড়িতাহত হব ভাবিনি! সে ব্যক্তি আর কেউ নয়, আমারই বন্ধু ও ক্লাস মেট খলিলুর রহমান! 
– সন্ধ্যার এক পর্যায়ে তাকে প্রশ্ন করার সুযোগ আসল, ইনি তোমার কি হয়?
– তিনি আমার বাবা! মাথায় যেন গোল পাকিয়ে গেল! খলিলদের স্থানীয় বাজার আর আমাদের বাজার ছিল ভিন্ন। তাছাড়া এই ব্যক্তিকে স্থায়ীভাবে রাস্তায় বসে ভিক্ষা করতে দেখতাম, ফলে খলিলের সাথে ওনার কি সম্পর্ক তা জানতাম না।
– মুহূর্তে আমার দুটি কথা মনে পড়ে গেল। প্রথমত: তার পিতা-মাতার চেরাগ ও কেরোসিন কেনার অক্ষমতার কথা শুনে খলিলের বাবা-মাকে কৃপণ বলেছিলাম। বড় অনুতপ্ত হলাম। সে বলল, তোমার বলাটি তো অনেক ছোট ছিল, তাই আমার সেটি মনে নাই। অনেক মানুষ তো আরো বেদনাদায়ক কথা বলে। সেগুলো এক সময় ভুলে যেতে বাধ্য হই।
– দ্বিতীয় প্রশ্নটি করলাম। আচ্ছা বলো তো, ‘স্কুলের ইংরেজি স্যার কি তোমাদের এই অবস্থা জানত না যে,? তোমার ভিক্ষুক বাবাকে বাজার থেকে আনতে গিয়ে তোমার রাত হয়ে যেত, তাই তুমি পড়াটা তৈরি করতে পারতে না?
– জানত! তাঁকে বলেছি, বহু বার বলেছি। আমার বাবাও বলেছে!
– তারপরও তোমাকে হেনস্তা করত কেন?
– স্যার বলেছিল গরীবের ছেলে লেখাপড়া করে কি করবে। একদিন এমনিতেই স্কুল ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে। তার চেয়ে বরং আমাদের বাড়ীতে কামলার কাজ কর, সেটাই তোমাদের সকলের জন্য মঙ্গল হবে!
– কিন্তু আমার বাবা চাইতেন আমি লেখা পড়া করে বড় হই। আমার বাবা আগে ভিক্ষুক ছিলেন না, চোখের ক্ষীণ আলো যতদিন ছিল ততদিন জাল বানা, জাল বোনা, বেতের কাজ করতেন। ক্লাস ফাইভে ভাল ফলাফল করার পর, টাকার অভাবে ভর্তি হতে ও বই কিনতে পারছিলাম না। সেদিন তিনি বলেছিলেন, তাঁর চোখের আলো না থাকলেও, বিদ্যা দিয়ে আমি যাতে পরিবারকে আলোকিত করতে পারি, সেজন্য তিনি টাকা জোগাতে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন।
– কিন্তু স্যারের মার আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। কেউ দয়া দেখিয়ে রক্ষাও করতেও পারছিলেন না। ফলে রিক্সা চালাই, ভ্যান গাড়ি চালাই! কেননা আমাদের ভাগ্যলিপি এভাবেই সাজানো হয়েছে!
– টিপু, আমাকে ভাড়ার টাকাটা দিয়ে দাও, আমি চলে যাই, আরো ভাড়া মারতে হবে।
– সম্বিত ফিরে পাই। আমার স্ত্রী-পুত্রকে ডেকে পরিচয় করে দিলাম এ আমার ক্লাস মেট ও বন্ধু। ভাগ্যের ফেরে আমি এখানে, সে ওখানে। এখানে অহংকার ও দাম্ভিকতার কিছুই নেই। আল্লাহর কৃতজ্ঞতা করি, এমনও হতে পারত, আমি তার মত খেটে খাওয়া মানুষের সাড়ির একজন হয়ে যেতে পারতাম! কিন্তু আল্লাহ আমার প্রতি বিশেষ দয়া দেখিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
মেট্রিক পরীক্ষার কোচিং করছি, এমন সময় ষষ্ঠ শ্রেণীর এক বালক স্কুলের বারান্দা দিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটে গেল! বদমেজাজি ইংরেজি স্যার দরজা খুলে দেখতে গেলেন, কে এভাবে দৌড়ে চলে গেল! 
-তিনি গলা বাড়িয়ে, চড়া গলায় কাউকে ডেকে প্রশ্ন করলেন, তুমি কাকে খুঁজে ফিরছ?
-বালক উত্তর দিল, তোমাকেই খুঁজে ফিরছি! 
-কেন?
-এই ইটের কণা তোমার মাথায় মারব, তাই তোমাকেই খুঁজিতেছি! 
-স্যার দ্রুত গতিতে ক্লাসে ঢুকে পড়লেন, মুহূর্তেই পিছন থেকে কিছু একটা প্রচণ্ড গতিতে তাঁর গায়ে আঘাত করল! ইটের টুকরা মাথায় আঘাত না করে, সরাসরি ডান হাতের আঙ্গুলে আঘাত করে! ঘটনাস্থলেই আঙ্গুল ভেঙ্গে যায়। 
যে হাতের আঙ্গুল একদা গরীব, অন্ধের প্রতিভাবান সন্তানকে জানোয়ার পিটুনির কাজে ব্যবহার হত। আজ সেই হাত নিজের সন্তানের হাতেই বার বার আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে। কৌতূহলের ব্যাপার হল, কয়দিন আগেই এই ছেলেটি লাঠির আঘাতে স্যারের হাত ভেঙ্গে দিয়েছিল। আজ সেই ভাঙ্গা হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে দিল! খলিলের রিক্সা স্কুলের পাশেই ছিল, সে স্যারকে টেনে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল, আর সকল ছাত্ররা কালের সাক্ষী হয়ে তাকিয়েই রইলাম।
Tags: সামাজিক
Previous Post

একটি ডিজিটাল চোখ

Next Post

একটি উটের আত্মকথা

Discussion about this post

নতুন লেখা

  • চিকিৎসায় মৌমাছির হুল ফুটানো ভাল-মন্দ দিক
  • PR পদ্ধতির নির্বাচন হলে ঝুলন্ত সংসদ হবে না
  • গরু-ছাগল মাদীর প্রানীর মুত্রের ঘ্রাণ নিয়ে নাক উল্টানোর কারণ
  • বিপদ আর আপদ এর পার্থক্য
  • আবদুল মালেক! ধর্মনিরপেক্ষতার মূল খিলান ধরে টান মেরেছিলেন

এই সপ্তাহের জনপ্রিয় লেখা

No Content Available

নজরুল ইসলাম টিপু

লেখক পরিচিতি । গাছের ছায়া । DraftingCare

Facebook Twitter Linkedin
© 2020 Nazrul Islam Tipu. Developed by Al-Mamun.
No Result
View All Result
  • মুলপাতা
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • কোরআন
    • হাদিস
    • ডায়েরি
    • জীবনী
  • সাহিত্য
    • গল্প
    • রচনা
    • প্রবন্ধ
    • রম্য রচনা
    • সামাজিক
  • পরিবেশ
    • উদ্ভিদ জগত
    • প্রাণী জগত
    • ভেষজ হার্বাল
    • জলবায়ু
  • শিক্ষা
    • প্রাতিষ্ঠানিক
    • মৌলিক
    • ইতিহাস
    • বিজ্ঞান
    • ভ্রমণ
    • শিশু-কিশোর
  • বিবিধ
    • ঘরে-বাইরে
    • জীবন বৈচিত্র্য
    • প্রতিবেদন
    • রাজনীতি
    • তথ্যকণিকা
  • লেখক পরিচিতি

© 2020 Nazrul Islam Tipu. Developed by Al-Mamun.