গাছের প্রাণ আছে! ব্যথায় নাকি তারা কান্নাও করে! মারাত্মক আহত ব্যক্তি আইসিউতে অজ্ঞান অবস্থায়। ডাক্তার বলে দিল, তিনি ঘুমিয়ে আছেন, এখন ব্যথা অনুভব করছেন না! আচ্ছা ডাক্তার কিভাবে বুঝল যে, অজ্ঞান আহত ব্যক্তি ব্যথা পাচ্ছেন না! মূলত এ সবই হচ্ছে হরমোনের খেলা। মানুষ যখন ব্যথা পায় তখন শরীরে এক ধরনের হরমোনের প্রভাব-বিস্তার ঘটে। আবার যখন কান্না পায় তখন ভিন্ন ধরনের হরমোন ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের এসব হরমোন নির্বাক গাছ, পালা, গুল্ম, তরুতেও আছে। তাদেরকে যখন কাটা হয়, তখন তাদের শরীরে সে সব হরমোন ছড়িয়ে পড়ে, যা মানুষের শরীর কাটা পড়লে বের হয়। সেভাবে কান্নার হরমোনও বের হয়। ব্যথা কান্নার একই হরমোন যখন গাছের দেহ থেকে বের হয়, তখন বুঝা যায় তারাও কান্না করে। তাদের মুখ নাই বলে চিৎকার করে বলতে পারেনা।
একই ভাবে, হাসি-খুশি, উদারতা-অনুগ্রহ, দয়া-মায়া, ক্ষমা-ত্যাগ, ধৈর্য-সহ্য, প্রেম-প্রীতি, ভালবাসা-ভালোলাগা, অনুরাগ-বিরাগ, দুঃখ-কান্না, তামাসা-উপহাস, লজ্জা-শরম, ঘৃণা-লোভ, রাগ-গোস্বা, হিংসা-দ্বেষ, কাতুকুতু-কৌতুক, ক্ষোভ-ক্রোধ, স্নেহ-মমতা, সহযোগিতা-সহানুভূতি, সহমর্মিতা-সৌজন্য, সাধুতা-তিতিক্ষা, আত্মবিশ্বাস-হতাশা সহ সকল ধরনের উপাদান তথা হরমোন আমাদের মগজে রয়েছে। এসব হরমোন ব্যবহার করে আমরা দুনিয়ার সবচেয়ে ভাল কাজ করতে পারি আবার সর্ব নিকৃষ্ট গর্হিত কাজও করতে পারি। এজন্য দরকার শুধু মানুষের নিয়ত করা তথা সিদ্ধান্ত নেওয়া। মানুষ যে বিষয়ের নিয়ত করবে, তার মন-মগজ যেভাবে কাজ করতে থাকে। আর ব্রেন সে কাজটি যথাযথ করতে পারার জন্য রসদ হিসেবে প্রয়োজনীয় হরমোন সাপ্লাই দিতে থাকবে। মূলত মানুষ ভাল খারাপ উভয় উপাদানে গঠিত। মানুষ ইচ্ছা করলে ভাল উপাদানকে কাজে লাগাতে পারে, আবার ইচ্ছে করলে খারাপ উপাদানও লাগাতে পারে। এই ব্যাপারটিকে লক্ষ্য করে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, “আমি মানুষকে এক সংমিশ্রিত বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছি, যাতে করে তার পরীক্ষা নিতে পারি”। সুরা ইনছান-২ এই বীর্যে পিতা-মাতার উপাদান যেভাবে থাকে, সেভাবে উপরের সমুদয় গুণাবলীও যোগ হয়ে পড়ে। আর পরীক্ষাটি সেই গুণাবলি দিয়েই করা হয়।
তাহলে এসব উপাদান কাজ করে কিভাবে? আর এটার সাথে সৎকর্মশীল শিশুর যোগসূত্রই বা কি? সেটা বুঝতে নিচের কথাগুলোর প্রতি মনোনিবেশ করা দরকার।
মানব মস্তিষ্ক দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে শিল্প, সাহিত্য, অংক, যুক্তিবিদ্যা, চিন্তা, গবেষণা, রুচি, অনুরাগ ইত্যাদির উপাদান থাকে। অন্যভাগে, কবিতা, গান, অঙ্কন, তর্কবিদ্যা, বুদ্ধিমত্তা, সাহস, বীরত্ব, দৃঢ়তা সহ নানাবিধ উপাদান থাকে। এই পৃথিবীর বুকে জীবন ধারণের জন্য সম্ভাব্য যত উপকরণ দরকার তার সবই মানুষের মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষের ইচ্ছা ও প্রয়োজনে সে সব উপকরণ সেকেন্ডেরও কম সময়ে মস্তিষ্ক সরবরাহ করে থাকে।
মানুষ যখন ভয় পায়, সেকেন্ডের কম সময়ে সারা দেহে, ভয়ের হরমোন ছড়িয়ে পড়র। হরমোন চেহারা থেকে রক্ত সরিয়ে নেয়। এতে মানুষের চেহারা বিবর্ণ হয়, এটা ভয়ের বাহ্যিক লক্ষণ। সেভাবে লজ্জা পেলে হরমোন সারা চেহারায় রক্ত ছড়িয়ে দেয়। মুখমণ্ডল লাল হয়ে উঠে। এটা লজ্জার ভাব। রাগ উঠলে রক্ত চোখে চলে যায়। রক্তবর্ণ চক্ষু রাগান্বিত হবার লক্ষণ। পেরেশান হলে হরমোন কপালে ভাজ বানিয়ে দেয়। বেশী ভাজ মানুষের দুশ্চিন্তার লক্ষণ। সেভাবে কাম ভাব উঠলে মানুষে চেহারা এক ধরনের হবে। লোভের চেহারা আরেক রকম। কুটিল, শঠ, ঠগ-বাজের চেহারা চরিত্র ভেদে ভিন্ন হয়। মানুষের এই পরিবর্তন প্রথমে ঘটে মগজে। মগজ দেহ ও মনকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর মগজকে নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের ইচ্ছা শক্তি। এই ইচ্ছা শক্তির নামই নিয়ত। মানুষ ইচ্ছা শক্তি দিয়ে মুহূর্তে কামাতুর হতে পারে, আবার দয়ার্দ্র কিংবা নিষ্ঠুরও হতে পারে। হিংসুক, নিন্দুক, মিথ্যুক, ধর্ষক, কপট সবই নিয়তের মাধ্যমে পরিচালিত খারাপ গুনের নাম। ঠিক বিপরীতে রয়েছে, ভাল গুন গুলোর অবস্থান।
পিতা-মাতার গোত্রীয় বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়ে সৃষ্টি হবে সন্তানের খাসিয়ত। এর মধ্যেও কিছু খাসিয়ত প্রাধান্য পায়, কিছু ধীরে ধীরে বিকশিত হয় আবার কিছু অপ্রকাশিত থাকে। মূলত, ব্যক্তি, পরিবেশ, বংশ ভেদে উপরোক্ত গুণাবলী মানুষের চরিত্রে তারতম্য হয়ে থাকে। তাই চরিত্রের মধ্যেও অধিক প্রভাব সৃষ্টিকারী গুণাবলী এবং কম প্রভাব সৃষ্টিকারী গুণাবলী গুলোর মাঝে সিরিয়াল ক্রম সৃষ্টি হয়। প্রতিটি গুণাবলী মানুষের চরিত্রে থাকার পরও, কিছু মানুষ অল্পে রেগে যায়। কিছু মানুষ শুরুতেই গালি শুরু করে। কিছু মানুষ হুমকি-ধমকি দিতে পছন্দ করে। কিছু মানুষ শঠতা করতে দারুণ ওস্তাদ। কিছু মানুষ চালাকি করতে ভালবাসে। কিছু মানুষ শরমিন্দা হয়, কিছু চুপ থাকে আর কিছু মানুষ ধৈর্য ধরে। উল্লেখ্য, ধৈর্য হল সকল গুণাবলীর প্রধান। এই গুন দ্বারা প্রভাবিত হলে, সকল খারাপ গুণাবলী মানব জীবনে সহজে বিকশিত হতে পারেনা। তবে কৌতূহলের বিষয় হল, কোন ব্যক্তির, কোন চরিত্রটি বেশী প্রাধান্য পাবে, সেটা তার মাতৃ গর্ভেই প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। এই গুণাবলীর প্রায়ই মায়ের আচরণের সাথেই সম্পর্কিত। সম্ভবত সে কারণেই, মানুষের তকদির লিখা হয় শিশু মাতৃগর্ভে আসার প্রায় দুই মাস পরে। (আল্লাহ ভাল জানেন) তাই প্রতিটি মা যদি এ সময়ে অধিক সতর্ক হয় তাহলে সেটা তার অনাগত সন্তানের জন্য অনেক ফলপ্রসূ হবে। তা কিভাবে?
সন্তান মায়ের দেহ থেকেই খানা খায়। মায়ের হরমোন থেকেই সাহায্য নেয়। মায়ের রক্তই সন্তানের রক্ত। মায়ের চরিত্রের প্রভাব শিশুর হরমোনে পড়ে। মা সারাদিন যে সব বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকে, সেই বিষয়ের হরমোনের প্রভাব শিশুর দেহে বিস্তার লাভ করে। মায়ের জীবনে যে চরিত্র প্রভাবিত হয় সে চরিত্রের হরমোন শিশুর জীবনে প্রভাবিত হবে। এভাবে শিশু দেহে প্রভাব সৃষ্টিকারী হরমোন গুলো তাদের স্থান করে নেয়।
ধরুন, মা যদি বেড়ার মধ্যে কান পেতে প্রতিবেশীর কিছু শুনতে চায়। তখন তার হরমোন শিশুর দেহেও ছড়িয়ে পড়ে। তখন গর্বের শিশুও মায়ের পেটের দেওয়ালে কান পেতে শুনতে চাইবে। সে হয়ত শুনবে না কিন্তু হরমোনের প্রভাবে তার এই চরিত্র তৈরি হবে। মা যদি হিংসুক হয় এবং দৈনন্দিন হিংসার অভ্যাস চালু রাখে, তাহলে তার সন্তানও হিংসুক চরিত্রের হবে। গর্ভাবস্থায় মা যদি দয়াশীলতার আচরণ করে, সন্তান দয়ালু হবে। একই ভাবে পেটে সন্তান নিয়ে মা যদি বিদ্যা, বুদ্ধি, গণিত, বিজ্ঞান নিয়ে বেশী চর্চা করে, তার প্রভাব সন্তানের জীবনে পড়বে। সেভাবে, হাদিস, কোরআন, নামাজ, রোজা, সদুপদেশ গ্রহণ, দান-খয়রাত করলে। সন্তানের জীবনেও তার প্রভাব পড়বে।
হাদিস শরীফে এসেছে, ভ্রুন সৃষ্টি হবার সত্তর তম দিনে সন্তানের তকদির ঘোষণা হয়। সুতরাং মা যদি ভ্রুন সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে নিজেকে পবিত্র-পরিচ্ছন্ন রাখে এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া অবধি সৎ কর্মে ব্যস্ত থাকে। তাহলে অবশ্যই তিনি একজন সৎকর্ম-শীল সন্তানের জননী হতে পারবে। এই কথাটি যেভাবে বিজ্ঞান দিয়ে যুক্তিযুক্ত সেভাবে ইসলাম ধর্মের মৌল জ্ঞান ও বিশ্লেষণের দিক দিয়েও যুক্তিযুক্ত। এটা এমন এক জ্ঞান জাতি ধর্ম নির্বশেষে সকলকেই উপকৃত করবে।
সে কারণে, হাদিস শরীফে বলা আছে, মহাকাশের নীচে, বিস্তীর্ণ জমিনের উপর ও দুইয়ের মাঝখানে যা আছে, সে সবের মূল্য যত; একজন আল্লাহ ভীরু, সৎকর্মশীল নারীর মূল্য তার চেয়েও অনেক বেশী। কেননা, এ ধরনের মহিলার গর্ভ থেকেই কেবল শতভাগ উত্তম গুণাবলী সম্পন্ন শিশুর জন্ম হতে পারে। যে সন্তান গুলো দুনিয়ার জীবনে সৎকর্মশীল ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী হবে।
একই ভাবে, হাসি-খুশি, উদারতা-অনুগ্রহ, দয়া-মায়া, ক্ষমা-ত্যাগ, ধৈর্য-সহ্য, প্রেম-প্রীতি, ভালবাসা-ভালোলাগা, অনুরাগ-বিরাগ, দুঃখ-কান্না, তামাসা-উপহাস, লজ্জা-শরম, ঘৃণা-লোভ, রাগ-গোস্বা, হিংসা-দ্বেষ, কাতুকুতু-কৌতুক, ক্ষোভ-ক্রোধ, স্নেহ-মমতা, সহযোগিতা-সহানুভূতি, সহমর্মিতা-সৌজন্য, সাধুতা-তিতিক্ষা, আত্মবিশ্বাস-হতাশা সহ সকল ধরনের উপাদান তথা হরমোন আমাদের মগজে রয়েছে। এসব হরমোন ব্যবহার করে আমরা দুনিয়ার সবচেয়ে ভাল কাজ করতে পারি আবার সর্ব নিকৃষ্ট গর্হিত কাজও করতে পারি। এজন্য দরকার শুধু মানুষের নিয়ত করা তথা সিদ্ধান্ত নেওয়া। মানুষ যে বিষয়ের নিয়ত করবে, তার মন-মগজ যেভাবে কাজ করতে থাকে। আর ব্রেন সে কাজটি যথাযথ করতে পারার জন্য রসদ হিসেবে প্রয়োজনীয় হরমোন সাপ্লাই দিতে থাকবে। মূলত মানুষ ভাল খারাপ উভয় উপাদানে গঠিত। মানুষ ইচ্ছা করলে ভাল উপাদানকে কাজে লাগাতে পারে, আবার ইচ্ছে করলে খারাপ উপাদানও লাগাতে পারে। এই ব্যাপারটিকে লক্ষ্য করে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, “আমি মানুষকে এক সংমিশ্রিত বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছি, যাতে করে তার পরীক্ষা নিতে পারি”। সুরা ইনছান-২ এই বীর্যে পিতা-মাতার উপাদান যেভাবে থাকে, সেভাবে উপরের সমুদয় গুণাবলীও যোগ হয়ে পড়ে। আর পরীক্ষাটি সেই গুণাবলি দিয়েই করা হয়।
তাহলে এসব উপাদান কাজ করে কিভাবে? আর এটার সাথে সৎকর্মশীল শিশুর যোগসূত্রই বা কি? সেটা বুঝতে নিচের কথাগুলোর প্রতি মনোনিবেশ করা দরকার।
মানব মস্তিষ্ক দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে শিল্প, সাহিত্য, অংক, যুক্তিবিদ্যা, চিন্তা, গবেষণা, রুচি, অনুরাগ ইত্যাদির উপাদান থাকে। অন্যভাগে, কবিতা, গান, অঙ্কন, তর্কবিদ্যা, বুদ্ধিমত্তা, সাহস, বীরত্ব, দৃঢ়তা সহ নানাবিধ উপাদান থাকে। এই পৃথিবীর বুকে জীবন ধারণের জন্য সম্ভাব্য যত উপকরণ দরকার তার সবই মানুষের মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষের ইচ্ছা ও প্রয়োজনে সে সব উপকরণ সেকেন্ডেরও কম সময়ে মস্তিষ্ক সরবরাহ করে থাকে।
মানুষ যখন ভয় পায়, সেকেন্ডের কম সময়ে সারা দেহে, ভয়ের হরমোন ছড়িয়ে পড়র। হরমোন চেহারা থেকে রক্ত সরিয়ে নেয়। এতে মানুষের চেহারা বিবর্ণ হয়, এটা ভয়ের বাহ্যিক লক্ষণ। সেভাবে লজ্জা পেলে হরমোন সারা চেহারায় রক্ত ছড়িয়ে দেয়। মুখমণ্ডল লাল হয়ে উঠে। এটা লজ্জার ভাব। রাগ উঠলে রক্ত চোখে চলে যায়। রক্তবর্ণ চক্ষু রাগান্বিত হবার লক্ষণ। পেরেশান হলে হরমোন কপালে ভাজ বানিয়ে দেয়। বেশী ভাজ মানুষের দুশ্চিন্তার লক্ষণ। সেভাবে কাম ভাব উঠলে মানুষে চেহারা এক ধরনের হবে। লোভের চেহারা আরেক রকম। কুটিল, শঠ, ঠগ-বাজের চেহারা চরিত্র ভেদে ভিন্ন হয়। মানুষের এই পরিবর্তন প্রথমে ঘটে মগজে। মগজ দেহ ও মনকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর মগজকে নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের ইচ্ছা শক্তি। এই ইচ্ছা শক্তির নামই নিয়ত। মানুষ ইচ্ছা শক্তি দিয়ে মুহূর্তে কামাতুর হতে পারে, আবার দয়ার্দ্র কিংবা নিষ্ঠুরও হতে পারে। হিংসুক, নিন্দুক, মিথ্যুক, ধর্ষক, কপট সবই নিয়তের মাধ্যমে পরিচালিত খারাপ গুনের নাম। ঠিক বিপরীতে রয়েছে, ভাল গুন গুলোর অবস্থান।
পিতা-মাতার গোত্রীয় বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়ে সৃষ্টি হবে সন্তানের খাসিয়ত। এর মধ্যেও কিছু খাসিয়ত প্রাধান্য পায়, কিছু ধীরে ধীরে বিকশিত হয় আবার কিছু অপ্রকাশিত থাকে। মূলত, ব্যক্তি, পরিবেশ, বংশ ভেদে উপরোক্ত গুণাবলী মানুষের চরিত্রে তারতম্য হয়ে থাকে। তাই চরিত্রের মধ্যেও অধিক প্রভাব সৃষ্টিকারী গুণাবলী এবং কম প্রভাব সৃষ্টিকারী গুণাবলী গুলোর মাঝে সিরিয়াল ক্রম সৃষ্টি হয়। প্রতিটি গুণাবলী মানুষের চরিত্রে থাকার পরও, কিছু মানুষ অল্পে রেগে যায়। কিছু মানুষ শুরুতেই গালি শুরু করে। কিছু মানুষ হুমকি-ধমকি দিতে পছন্দ করে। কিছু মানুষ শঠতা করতে দারুণ ওস্তাদ। কিছু মানুষ চালাকি করতে ভালবাসে। কিছু মানুষ শরমিন্দা হয়, কিছু চুপ থাকে আর কিছু মানুষ ধৈর্য ধরে। উল্লেখ্য, ধৈর্য হল সকল গুণাবলীর প্রধান। এই গুন দ্বারা প্রভাবিত হলে, সকল খারাপ গুণাবলী মানব জীবনে সহজে বিকশিত হতে পারেনা। তবে কৌতূহলের বিষয় হল, কোন ব্যক্তির, কোন চরিত্রটি বেশী প্রাধান্য পাবে, সেটা তার মাতৃ গর্ভেই প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। এই গুণাবলীর প্রায়ই মায়ের আচরণের সাথেই সম্পর্কিত। সম্ভবত সে কারণেই, মানুষের তকদির লিখা হয় শিশু মাতৃগর্ভে আসার প্রায় দুই মাস পরে। (আল্লাহ ভাল জানেন) তাই প্রতিটি মা যদি এ সময়ে অধিক সতর্ক হয় তাহলে সেটা তার অনাগত সন্তানের জন্য অনেক ফলপ্রসূ হবে। তা কিভাবে?
সন্তান মায়ের দেহ থেকেই খানা খায়। মায়ের হরমোন থেকেই সাহায্য নেয়। মায়ের রক্তই সন্তানের রক্ত। মায়ের চরিত্রের প্রভাব শিশুর হরমোনে পড়ে। মা সারাদিন যে সব বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকে, সেই বিষয়ের হরমোনের প্রভাব শিশুর দেহে বিস্তার লাভ করে। মায়ের জীবনে যে চরিত্র প্রভাবিত হয় সে চরিত্রের হরমোন শিশুর জীবনে প্রভাবিত হবে। এভাবে শিশু দেহে প্রভাব সৃষ্টিকারী হরমোন গুলো তাদের স্থান করে নেয়।
ধরুন, মা যদি বেড়ার মধ্যে কান পেতে প্রতিবেশীর কিছু শুনতে চায়। তখন তার হরমোন শিশুর দেহেও ছড়িয়ে পড়ে। তখন গর্বের শিশুও মায়ের পেটের দেওয়ালে কান পেতে শুনতে চাইবে। সে হয়ত শুনবে না কিন্তু হরমোনের প্রভাবে তার এই চরিত্র তৈরি হবে। মা যদি হিংসুক হয় এবং দৈনন্দিন হিংসার অভ্যাস চালু রাখে, তাহলে তার সন্তানও হিংসুক চরিত্রের হবে। গর্ভাবস্থায় মা যদি দয়াশীলতার আচরণ করে, সন্তান দয়ালু হবে। একই ভাবে পেটে সন্তান নিয়ে মা যদি বিদ্যা, বুদ্ধি, গণিত, বিজ্ঞান নিয়ে বেশী চর্চা করে, তার প্রভাব সন্তানের জীবনে পড়বে। সেভাবে, হাদিস, কোরআন, নামাজ, রোজা, সদুপদেশ গ্রহণ, দান-খয়রাত করলে। সন্তানের জীবনেও তার প্রভাব পড়বে।
হাদিস শরীফে এসেছে, ভ্রুন সৃষ্টি হবার সত্তর তম দিনে সন্তানের তকদির ঘোষণা হয়। সুতরাং মা যদি ভ্রুন সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে নিজেকে পবিত্র-পরিচ্ছন্ন রাখে এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া অবধি সৎ কর্মে ব্যস্ত থাকে। তাহলে অবশ্যই তিনি একজন সৎকর্ম-শীল সন্তানের জননী হতে পারবে। এই কথাটি যেভাবে বিজ্ঞান দিয়ে যুক্তিযুক্ত সেভাবে ইসলাম ধর্মের মৌল জ্ঞান ও বিশ্লেষণের দিক দিয়েও যুক্তিযুক্ত। এটা এমন এক জ্ঞান জাতি ধর্ম নির্বশেষে সকলকেই উপকৃত করবে।
সে কারণে, হাদিস শরীফে বলা আছে, মহাকাশের নীচে, বিস্তীর্ণ জমিনের উপর ও দুইয়ের মাঝখানে যা আছে, সে সবের মূল্য যত; একজন আল্লাহ ভীরু, সৎকর্মশীল নারীর মূল্য তার চেয়েও অনেক বেশী। কেননা, এ ধরনের মহিলার গর্ভ থেকেই কেবল শতভাগ উত্তম গুণাবলী সম্পন্ন শিশুর জন্ম হতে পারে। যে সন্তান গুলো দুনিয়ার জীবনে সৎকর্মশীল ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী হবে।
Discussion about this post