দুনিয়াতে কিভাবে মানুষের বিকাশ হয়, সে কোত্থেকে আসে, কিভাবে বড় হয়, কে তাকে বড় করে, তার শরীরের অবকাঠামো কেমন হবে, কতদিন তার শরীর সক্ষম থাকবে, দেহ অভ্যন্তরের কোন জিনিষ কিরূপ পাবে তার সব তথ্যই ডিএনএ’র মধ্যে লুকায়িত থাকে।
শিশু যখন মাতৃ-জঠরে থাকে তখন DNA – ডিএনএ নির্দেশ দিতে থাকে, কখন শিশুর হাত-পা বানানো শুরু করবে এবং সেটা যথাযথ সমাধা করতে কি পরিমাণ মাল মসল্লার দরকার হবে।
ডিএনএ’র শুধু নির্দেশ দিয়েই তার কাজ শেষ করেনা। সঠিক সময় প্রয়োজন অনুপাতে সাপ্লাই দিয়ে সেটা গড়ে তুলে, আবার সেটাকে সক্ষম অবস্থায় চালু করে দেওয়াও ডিএনএ কাজ।
এই মুহূর্তে ব্যাপারটি বুঝতে কিছুটা কষ্ট হলেও একটু পরেই বিষয়টি আরো সহজ হয়ে যাবে। তার আগে চলুন দেখে নিই, মানবজীবনে ডিএনএ উৎপত্তি হয় কিভাবে। মানুষ সৃষ্টিতে DNA প্রভাব
আরো পড়ুন…
- মৌমাছি সেরা খাদ্য প্রস্তুতকারক
- আল্লাহর সৃষ্টির বিরল নিপুণতা
- আল্লাহর সৃষ্টির বিরল নিপুণতা
প্রতিটি মানুষের ভিন্ন ভিন্ন ডিএনএ কোড রয়েছে। কারো সাথে কারোর মিল নেই। মাতৃগর্ভে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর সংমিশ্রণে যখন একটি শিশুর অস্তিত্বের শুরু হয়।
তখন পিতা-মাতার ডিএনএ থেকে গর্ভস্থ শিশুর জন্য একটি নতুন ডিএনএ কোড সৃষ্টি হয়ে যায়। এই কোড সারাজীবনের জন্য ফিক্সড হয়ে যায়। যা পরিবর্তন কিংবা বদলানো যায় না।
ডিএনএ স্থায়ী হবার এই পর্যায়কে যদি তকদির হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাহলে বলতে হবে তকদির অপরিবর্তনশীল ও স্থায়ী। কেননা ডিএনএর এই ব্যাপারটিতে পরিবর্তন হলেই সৃষ্টি জগতে বিপর্যয় হবে। মানুষ সৃষ্টিতে DNA প্রভাব
গর্ভস্থ শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও শারীরিক অবস্থা কেমন হবে? ছেলে নাকি মেয়ে? গায়ের বর্ণ, দাঁতের ধরণ, চোখ, মুখ, কান, নাক, চুল, নখ থেকে শুরু করে হাঁড়, মাংস, মগজ, হৃৎপিণ্ড, কলিজা, পেট, অন্ত্র সহ বিস্তারিত সবই এই ডিএনএ কোডে লিখা হয়ে যায়।
শুধু তাই নয় শিশুর অঙ্গগুলো সুপরিমিত থাকে। যেমন উভয় হাতের আঙ্গুল একই হবে, কোন একটির আঙ্গুল মোটা কিংবা লম্বা হবেনা। উভয় পায়ের পাতা যদি বড় ছোট হত তাহলে দৌড়াতে কিংবা হাটতে পারত না।
একটি চোখ বেঢপ বড়, অন্যটি ক্ষুদ্র এমন বৈসাদৃশ্য হয়না। মানুষের আকৃতি অনুসারে হৃদপিণ্ডের আকার হয়, সে অনুযায়ী পিত্ত থলি কিংবা কিডনি।
এভাবে পা, কান, ফুসফুস, মগজ সর্বত্রই একটি সুসামঞ্জস্যতা কাজ করে। এসব তথ্য সংরক্ষণ থাকে ডিএনএ এর মধ্যে। এই কথাটির সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায় পবিত্র কোরআনে।
“শুক্র থেকে তাকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তাকে সুপরিমিত করেছেন” আবাসা-১৯
শিশু ভূমিষ্ঠ হবার আগের আচরণ কেমন করবে এবং ভূমিষ্ঠ হবার পরের আচরণ কেমন হবে সবই ডিএনএ কোডে তথ্য হিসেবে সংরক্ষিত হয়ে যায়। ডিএনএ’তে নির্দেশিত তথ্য মতো হুবহু প্রাণী সৃষ্টি হয়ে যায়।
ওজনে, আকারে, দৈর্ঘ্যে-প্রস্তে কোন ব্যত্যয় ঘটেনা। মানব শিশু পিতা-মাতার ভ্রূণ মিলিত হবার পরক্ষণেই ডিএনএর কার্যক্রম শুরু হয়ে যায় এবং মৃত্যু অবধি সে মানুষ সৃষ্টির কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখে।
মানুষ মরে গেলেও ডিএনএ মানুষের মরা জিনিষের মধ্যেও নিজের অস্তিত্ব লুকিয়ে রাখে।
Discussion about this post