সুস্থ শরীর আল্লাহর অন্যতম প্রধান নেয়ামত। হাশরের ময়দানে দুনিয়ার সকল নেয়ামত রাজি নিয়ে প্রশ্ন করা হবে। প্রথম প্রশ্নটি হবে শরীর নিয়ে। তোমাকে সুন্দর একটি দেহ কাঠামো দেওয়া হয়েছিল সেটাকে কি কাজে লাগিয়েছে? তামাসাচ্ছলে বিড়ি খাওয়া, গাজা কিংবা মদের টান কেন দেহাভ্যন্তরের ঢুকানো হয়েছিল! এ ধরনের এক একটি প্রশ্নের যথাযথ উত্তর চাওয়া হবে। একটি প্রশ্নের উত্তরের জন্য কোটি বছর ঠাই দাড় করিয়ে রাখা হবে সেদিন। মাথার উপরে গনগনে সূর্য, তামার পাতের মত উত্তপ্ত পাটাতনে দাড়িয়ে মানুষ নিজের ঠোট নিজে কামড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করবে, কেন খেয়েছিলাম? এটা ক্ষুদ্র মাদকের কথা বলছি। নিজের দেহ বলে তার উপর জুলুম করার কিঞ্চিত অধিকার আল্লাহ মানুষকে দেয়নি। সরকার ছুটি দিয়েছে, তাই বিবাহের আনন্দ নিয়ে গ্রামে গিয়ে শত মানুষের দেহে করোনা সংক্রমণ করে অতঃপর জিল্লতির আশ্রয় নিয়ে ইতর প্রাণীর তিলে তিলে কষ্ট পেয়ে মরে গিয়ে শহীদ হয়ে যাবেন! এত সোজা নয়। হিসেব অত সোজা নয়। দুনিয়ার জীবনে যে ব্যক্তি অন্যের ক্ষতি ও উৎপাতের কারণ হয়, সে ব্যক্তি সৃষ্টি জগতের মধ্যে অধম। এ ধরনের মানুষকে সাইজ করে দেবার জন্য, শাস্তির জন্য সৃষ্টি করা ফেরেশতাদের হাত গুলো পিস-পিস করতে থাকে।
নিজের অবহেলায় করোনা বিস্তার করেছেন! এমনিতেই মাপ পেয়ে যাবেন! দেহের প্রতি অবিচারের জন্য প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে সেখানে, নতুবা দোষ স্বীকার করে সোজা জাহান্নামে যেতে হবে। সেটা কোন জাহান্নাম? হাশরের ময়দানে মানুষের বুক ফেটে যাবে তিয়াসায়, ভয়ঙ্কর ক্ষিদে মানুষের দেহ কুণ্ডলীর মত হতে চাইবে। রুক্ষ চেহারা ও কঠোর হৃদয়ের ফেরেশতারা সেদিন পিটিয়ে মেরুদণ্ডকে সোজা হয়ে দাড়াতে বাধ্য করা হবে। মগজ টলমল করে উতলাতে থাকবে, পায়ের পাতা রাখা দায় হবে কিন্তু দাড়াতেই হবে, দিশেহারা আতঙ্কিত মানুষ আবারো মরে যাবার জন্য কাকুতি মিনতি করবে, এই ফরিয়াদের উত্তরে তার জিল্লতি আরো বাড়ানো হবে সে ময়দানে আমি তার কথা বলছি।
রাজা-মহারাজা আর দুনিয়ার জীবনে ক্ষমতার চৌহদ্দির মধ্যে থেকে আয়েশে বেড়ে উঠা মানুষের উপর ফেরেশতাদের আক্রোশ দেখে আশে পাশের মানুষ দূরে পালাতে থাকবে। দুনিয়ায় ক্ষমতাশীল মানুষ গুলো থাকবে সেদিন বেশী অসহায় ও অপমান জনক অবস্থায়। তাদের সাথীরা সেখানটার আশে পাশেও থাকতে চাইবে না। তারা নিজেদের করুণ পরিণতি চোখে আঙ্গুল দিয়ে না দেখার চেষ্টা করবে। কিন্তু কড়া মেজাজি ফেরেশতারা দুনিয়ার জীবনে যার সাথে যার সখ্যতা, উঠা-বসা, লেন-দেন, পছন্দ-অপছন্দ ভাগাভাগি করে হাসি তামাশায় জীবন কাটিয়েছে, হুবহু সে হিসেবেই ময়দানের ছক সাজাবেন এবং মানুষকে নির্দয় আচরণের মাধ্যমে গ্রুপে থাকতে বাধ্য করবে। শাসকের গ্রুপের উপর যে নির্যাতন দুনিয়াতে তার সাথে থাকা মানুষেরাও তার সমান হিস্যা পাবে। প্রত্যেকের কৃতকর্মের ধরণ অনুযায়ী, তাদের উপর শাসনের পাহাড় চেপে বসবে। এটা বিচার শুরু হবার আগে মানুষের সাথে আপ্যায়নের প্রকৃতির কথা বলছি। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করেও মানুষ লাখ বছর দাড়িয়ে থাকতে চাইবে, তারপরও জাহান্নামের দিকে ভয়ে-আতঙ্কে তাকাবার সাহস হবেনা। (আল্লাহ আমাকে রক্ষা করুন)
তাই আসুন, সচেতন হই। অধিক সচেতন হই। যে যেখানে চলে গেছেন আর নয়। কেউ তার এলাকার ত্যাগ করবেন না। এটা রাসুল (সা) এর নির্দেশ। রাসুল (সা) নিজে থেকে কোন কথা বলতেন না। আল্লাহর শিখিয়ে দেওয়া কথা দিয়েই মানুষকে সাবধান করেছেন। সবাই তওবা করুন, অসুস্থ হলে প্রতিনিয়ত তওবার মধ্যে নিজেকে গণ্য রাখুন (আল্লাহ আমাকেও সে তৌফিক দাও), তারপরও নিজের অ-সচেতনতা ও অসাবধানতার কারণে যাতে অন্যের দেহ সংক্রমিত না হয়। এটা বুঝাই বড় জরুরী। সে হিসেবে আপনিই ভাবুন, যদি নিজের অজান্তে আপনি ইতিমধ্যে রোগী হয়ে বসেন। তাহলে কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যাতে নিজের কারণে অন্যজন সংক্রমিত না হয়।
Discussion about this post